প্রোডাক্ট খোলার পর কেন দ্রুত ব্যবহার করা জরুরী ?
যখন কোনো স্কিনকেয়ার বা কসমেটিক প্রোডাক্ট সম্পূর্ণ সিল করা থাকে, তখন সেটির ভেতরের ফর্মুলা বাইরের বাতাস, ধুলাবালি, আর্দ্রতা, ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাস এসবের সংস্পর্শে আসে না।
অর্থাৎ, তখন প্রোডাক্টের ভেতরের Active Ingredients থাকে শক্তিশালী, স্থিতিশীল, কার্যকর এবং দীর্ঘদিন নিরাপদ । কিন্তু আপনি যখন একবার ঢাকনা খুললেন, বাতাস, হাতের জীবাণু , পরিবেশের ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করতে পারে, এই সব মিলিয়ে ধীরে ধীরে প্রোডাক্টের ফর্মুলা অক্সিডাইজ হতে থাকে এবং Preservative দুর্বল হতে শুরু করে। Active Ingredients গুলো তাদের কাজ করার ক্ষমতা হারাতে থাকে। আর জীবাণু জন্মানোর আদর্শ পরিবেশ তৈরি হয়ে যায়।বাইরে থেকে প্রোডাক্ট দেখতে একদম ঠিকঠাক মনে হলেও, ভেতরে ভেতরে সেটি আর আগের মতো “Fresh, Pure & Safe” থাকে না।
আমরা অনেকেই খুব নিশ্চিন্ত মনে বলে ফেলি আরে, এখনও তো Expiry Date অনেক বাকি আছে, প্রোডাক্ট একদম সেফ! এই কথাটা কমন এবং ভুল, যে আমরা প্রায় সবাই জীবনের কোনো না কোনো সময় এটা বিশ্বাস করেছি। বিশেষ করে স্কিনকেয়ার, হেয়ারকেয়ার আর কসমেটিক প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে আমরা ভাবি Expiry যদি ২–৩ বছর পর হয়, তাহলে ধীরে সুস্থে ব্যবহার করলেও কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু সত্যিটা হচ্ছে -
- Expiry Date আর খোলা (Opened) প্রোডাক্টের নিরাপত্তা এক নয়,
- Expiry Date শুধু বোঝায় প্রোডাক্ট সিল করা অবস্থায় কতদিন পর্যন্ত ভালো থাকবে
এই পার্থক্যটা না বোঝার কারণেই প্রচুর মানুষ অজান্তে নিজের ত্বক আর চুলের স্থায়ী ক্ষতি করে ফেলেন। Expiry date বাকি থাকলেও খোলা প্রোডাক্ট কেন ক্ষতিকর হতে পারে?
খোলা প্রোডাক্ট দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে সেই প্রোডাক্ট ধীরে ধীরে “Contaminated” হয়ে যায়। অর্থাৎ, এতে জীবাণু ব্যাকটেরিয়া এবং নষ্ট উপাদান জমতে থাকে। এর প্রভাব সরাসরি পড়ে আপনার স্কিন আর চুলের ওপর। এর ফলে যে সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে -
- হঠাৎ ব্রণ ওঠা অথবা পুরোনো ব্রণ শুকোতে না চাওয়া
- র্যাশ, লালচে ভাব ও জ্বালাত ও স্কিন সেনসিটিভ হয়ে যাওয়া
- স্কিন কালো বা ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হয়ে যাওয়া
- অতিরিক্ত হেয়ার ফল, স্ক্যাল্পে খুশকি ও ড্যামেজ
ঠিক তখনই আমদের মনে হয়, আমার স্কিন টাইপ বুঝি বদলে গেছে, এই প্রোডাক্ট তো আগে এত ভালো কাজ করতো! কিন্তু আসল দোষটা থাকে সেই পুরোনো, নষ্ট বা জীবাণু জমে যাওয়া প্রোডাক্টের।
দ্রুত ব্যবহার কেন এত জরুরি ?
- Fresh প্রোডাক্টে Active Ingredients সবচেয়ে ভালো থাকে
- খোলা রাখা প্রোডাক্টে কার্যকারিতা ধীরে ধীরে কমে যায়
- ব্যাকটেরিয়া জন্মানোর ঝুঁকি কয়েকগুণ বেড়ে যায়
- স্কিন ও হেয়ারের লং-টার্ম ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়
- স্কিন রিকভারি করতে সময় ও টাকা দুটোই বেশি লাগে
এই কারণেই স্কিনকেয়ার জগতে একটা কথা চিরসত্য হলো, Fresh Product মানেই Best Result!
আপনি কীভাবে বুঝবেন প্রোডাক্ট নষ্ট হয়ে গেছে বা নষ্ট হতে শুরু করেছে ?
- আগের মতো গন্ধ না থাকা এবং দুর্গন্ধ পাওয়া,
- রঙ পরিবর্তন হয়ে যাওয়া,
- স্কিনে লাগালে জ্বালা, পোড়া বা চুলকানি হওয়া
এই লক্ষণগুলোর যেকোনো একটি দেখলেই সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহার বন্ধ করুন, কারণ এগুলোর মানে একটাই, প্রোডাক্ট আর স্কিন বা চুলের জন্য নিরাপদ নয়। Expiry Date বাকি মানেই প্রোডাক্ট চিরকাল সেফ এই ধারণাটা শুধু ভুল নয়, মারাত্মক ক্ষতিকরও হতে পারে।
বিশেষ করে প্রোডাক্ট একবার খোলা হয়ে গেলে, প্রতিটি স্কিনকেয়ার, হেয়ারকেয়ার ও কসমেটিক প্রোডাক্টের একটা নির্দিষ্ট নিরাপদ সময়সীমা থাকে। সেই সময় পেরিয়ে গেলে প্রোডাক্ট যত দামি এবং ব্র্যান্ডেড হোক না কেন ত্বক এবং চুলের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। তাই আজ থেকেই মনে রাখুন, “প্রোডাক্ট খোলা মানেই দ্রুত ব্যবহার, দেরি মানেই ঝুঁকি ” ত্বক এবং চুলের সুরক্ষার জন্য সব সময় Fresh, Safe এবং সঠিক সময়ের মধ্যে ব্যবহার করা প্রোডাক্টই বেছে নিন।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: আপনার যেকোনো ধরনের সমস্যায়,আমাদের কনসাল্টেশন ফর্ম বা Skin Analyzer এর মাধ্যমে আপনার স্কিন টাইপ অনুযায়ী সঠিক প্রোডাক্টটি নিতে পারেন।